মোঃ আরাকাত সরকার রাসেল, রিপোর্টার-মুরাদনগরঃ মুরাদনগরে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় রাস্তার উন্নয়নমূলক কাজে বাধাঁ দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী কাইয়ুম মিয়ার নাক ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করেছে চাঁদাবাজরা। উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার আকুবপুর ইউনিয়নের বলীঘর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। সরেজমিনে জানা যায়, কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার ২নং আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাজাবাড়ি পাকা রাস্তা থেকে বলীঘর বাজার পর্যন্ত রাস্তাটি খুবই জনগুরত্বপূর্ণ। তাই এলাকার দানবীর ও শিক্ষানুরাগী আলহাজ্ব গোলাম কিবরিয়া সরকার রাস্তাটি পাকা করতে স্থানীয় এমপির দারস্থ হন। সম্প্রতি এমপি আলহাজ্ব ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন ওই রাস্তা পাকা করার জন্য ১কোটি ৫লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। রাস্তাটি বাস্তবায়নের জন্য দরপত্র আহ্বান করলে মেসার্স নীরু এন্টার প্রাইজ কার্যাদেশ পায়। সে মোতাবেক গত ১৫/১৬দিন যাবৎ ওই রাস্তার কাজ শুরু হলে এলাকাবাসীর মাঝে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করে। গত শনিবার রাতে রাস্তায় কাজ চলাকালীন একই গ্রামের মৃত মঙ্গল মিয়ার ছেলে রফিকুল ইসলাম ও আরন মিয়ার ছেলে বেদন মিয়ার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বাধাঁদান করে। তখন চাঁদা দেওয়ার জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী কাইয়ুম মিয়াকে ব্যাপক মারধর করে। এক পর্যায়ে চাঁদাবাজরা কিল-ঘুষি দিয়ে কাইয়ুম মিয়ার নাক ফাটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। খবর পেয়ে এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে গেলে চাঁদাবাজরা দেখে নেওয়ার হুমকি-ধমকি দিয়ে চলে যায়। ভোক্তভোগী কাইয়ুম মিয়া বলেন, আমি শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাস্তার কাজ দেখে বাড়ি ফিরছিলাম। পথিমধ্যে কাইয়ুম ও বেদন আমার পথ আগলে ধরে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় রাস্তার কাজ বন্ধ করে দেয়। তখন আমি প্রতিবাদ করলে তারা আমার উপর চড়াও হয়ে আক্রমন চালায়। বলীঘর গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, রাজাবাড়ি থেকে বলীঘর পর্যন্ত রাস্তটি ছিল বেহাল দশায়। বৃষ্টি আসলেই রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলতো দূরের কথা মানুষ পায়ে হেটেও যেতে পারেনি। রাস্তাটি পাকা হওয়া ছিল এলাকার মানুষের স্বপ্ন। স্বপ্নের রাস্তার কাজে যারা চাঁদা দাবি করে বাঁধা সৃষ্টি করেছে তাদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চাই। একই গ্রামের আবু নাছের দুলাল বলেন, রাস্তাটিতে খানাখন্দ থাকায় মানুষের ভোগান্তি ছিল চরমে। একজন মুমূর্ষ রোগীকে হাসপাতালে নিতে বেশ কষ্ট হতো। এমন জনগুরুত্বপুর্ণ রাস্তার কাজে যারা চাঁদা দাবি ও বাঁধা সৃষ্টি করে তারা কখনো সমাজের মঙ্গল চায়না। এ বিষয়ে অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম ও বেদন মিয়ার সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও কলটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। তবে এ বিষয়ে কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুরাদনগর উপজেলা প্রকৌশলী রায়হানুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বিষয়টি শুনে আমি নিজেও মর্মাহত। উন্নয়নমূলক কাজে বাঁধা দিলে কাজের গতি কমে। অনেক এলাকায় চাঁদাবাজদের কারণে কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ঐসব এলাকার মানুষ বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়।